গাজী টায়ার কারখানায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ছয়তলা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেটির উপরের অংশে উদ্ধার কাজ চালানো সম্ভব না বলে জানিয়েছে বুয়েটের প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে পুড়ে যাওয়া গাজী টায়ার কারখানা পরিদর্শন শেষে বুয়েটের প্রফেসর রাকিব আহসান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এ সময় তিনিসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব ফায়ার সার্ভিসের লেদার মেশিন দিয়ে ছাদের উপরে ও বিভিন্ন তালার অংশ ঘুরে দেখেন। তবে ভবনের উপরের অংশে উদ্ধার অভিযান না হলেও ভবনের ভিত্তি প্রস্তরে কিছু অংশে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান চালাবে।
এর আগে এদিন সকাল ৯টার দিকে বুয়েটের এক সদস্যের প্রতিনিধি দল গাজী টায়ারস কারখানা পরিদর্শনে আসেন৷
বুয়েটের প্রকৌশলী রাকিব আহসান বলেন, গতকাল রাতে জেলা প্রশাসক বুয়েটকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি সকালে এসে কারখানাটির অংশ পরিদর্শন করেছি এবং ফায়ার সার্ভিসের লেদার দিয়ে উপরে উঠে ভবনের বিভিন্ন অংশ চেক করে দেখেছি। আমরা খালি চোখে কোনো লাশ দেখতে পাইনি। এছাড়া গতকাল ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ড্রোন দিয়ে কিছু ভিডিও ও ছবি তুলেছেন সেগুলো দেখলাম। টানা প্রায় তিনদিন ধরে ভবনটিতে আগুন জ্বলেছে। এ কারণে ভবনটির অনেক অংশ ধসে পড়েছে। ছয়তলা বিল্ডিংয়ের চারতলা ও পাঁচতলার ছাদ ভেঙে তিনতলার বেজমেন্টে এসে পড়েছে। ভবনের বিভিন্ন অংশের রড বের হয়ে গেছে। ভবনের আগুন উপরের দিকে বেশি সময় ধরে জ্বলার কারণে উপরের দিকে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। ভবনটিতে প্রচুর পরিমাণ কেমিক্যাল ছিল।
তিনি বলেন, ভবনটির তৃতীয়তলার বিভিন্ন অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে ভবনটিতে উদ্ধারকাজ চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যখন র্যাংস ভবন ভেঙেছিল, তখন আমরা গিয়েছিলাম। গাজী টায়ার কারখানার অবস্থা র্যাংস ভবনের থেকেও খারাপ। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ভবনটির নিচতলার বেইজমেন্টে উদ্ধার অভিযান চালাবে। ভবনটি ভাঙতে হলেও তা খুবই পরিকল্পনা মাফিক করতে হবে।
এ সময় বৃহত্তর ঢাকার ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা তদন্ত কমিটির সঙ্গে বসেছিলাম। ড্রোন ও লেদার দিয়ে ভবনের বিভিন্ন অংশ চেক করেছি। খালি চোখে যতটুকু দেখা যায় তাতে কোনো ভিকটিম দেখিনি। ভবনের বিভিন্ন কলামের রড বের হয়ে গেছে ও ফুলে গেছে। চার ও পাঁচতলা ছাদ ভেঙে পড়েছে। এ ভবনে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব না। তবে আজ আমরা ভবনের নিচে বেজমেন্টে রেসকিউ অপারেশন চালাবো।
ফায়ার সার্ভিসের বৃহত্তর ঢাকার সহকারী পরিচালক জানান, তদন্ত কমিটি, বুয়েটের বিশেষজ্ঞের নির্দেশে ভবনটির বেইজমেন্টে নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে কোনো লাশ বা মরদেহের দেহাবশেষ পাওয়া যায়নি। আপাতত উদ্ধার অভিযান শেষ। ফায়ার সার্ভিসের টিম এখানে থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত স্বজনদের দাবি অনুযায়ী ১৮৭ জন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা পাওয়া গেছে। পরে শিক্ষার্থী ও পুলিশের সমন্বয়ে তালিকা হলে সেখানে নিখোঁজের সংখ্যা ছিল ১২৯ জন।