জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার দায়ে দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ অষ্টম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ মোট ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল এ সাক্ষ্যগ্রহণ করছেন। আজ দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের কথা রয়েছে।
এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সপ্তম দিনে নবম সাক্ষী হিসেবে একাত্তর টিভির স্থানীয় সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম অনিকের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। পলাতক আট আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।
প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, সাইমুম রেজা তালুকদার, আবদুস সোবহান তরফদার ও সহিদুল ইসলাম।
২৫ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ দিনে অনিকসহ দুজন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। ২৪ সেপ্টেম্বর সাক্ষী শফিকুল ইসলামের জেরা শেষে আরেকজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর শফিকুল ও প্রত্যক্ষদর্শী মতিবর রহমান সাক্ষ্য দেন। ১৮ সেপ্টেম্বর তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর দুইজন সাক্ষী এবং ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম দিনে শহীদ আস সাবুরের ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম ও শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের বাবা মো. খলিলুর রহমান সাক্ষ্য দেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। এর আগে, ২১ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। উপস্থিত আট আসামির সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেও এসআই শেখ আবজালুল হক দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে চান। আদালত তার স্বীকারোক্তি রেকর্ড করে রাজসাক্ষী হওয়ার অনুমতি দেয়।
গ্রেপ্তার আটজন হলেন—ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, এসআই আবজাল এবং কনস্টেবল মুকুল। সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ অন্য আটজন এখনও পলাতক।
গত ২ জুলাই প্রসিকিউশন এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয়। অভিযোগপত্রের সঙ্গে ৩১৩ পৃষ্ঠার তথ্যসূত্র, ৬২ জন সাক্ষীর তালিকা, ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ এবং দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত করা হয়। ট্রাইব্যুনাল পরে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। এরপর তাদের লাশ পুলিশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ সময় একজন আহত অবস্থায় জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। পরবর্তীতে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়।





