নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে দায়ের করা আপিলের তৃতীয় দিনের শুনানি চলছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে ইন্টারভেনর হিসেবে উপস্থিত আছেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী। এর আগে বুধবার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।
গত ২১ অক্টোবর এই আপিলের শুনানি শুরু হয়। এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ।
পরে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংযোজন করা হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট করেন।
২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ রায় দিয়ে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে রিটটি খারিজ করেন। পরে ২০০৫ সালে আপিলের অনুমতি মঞ্জুর হলে, আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
এই রায়ের পর সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করে। ২০১১ সালের ৩০ জুন সংসদে সংশোধনী বিল পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশ করা হয়।
পরে এ রায় পুনর্বিবেচনার দাবিতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। তাদের সঙ্গে তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমানও ছিলেন।
অন্যদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর এবং জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর পৃথক আবেদন দাখিল করেন। একই বিষয়ে নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও গত বছর পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এই সব আবেদনের প্রেক্ষিতে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে চলমান শুনানিতে রাজনৈতিক ও আইনজীবী মহলে নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার ঢেউ উঠেছে।





