জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা–এ ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের ১১তম দিনের কার্যক্রম আজ (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে আজকের সাক্ষ্যগ্রহণ নির্ধারিত রয়েছে। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আজ দুইজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে সোমবার (১০ নভেম্বর) সাক্ষ্য দিয়েছেন জুলাই আন্দোলনের নেতা ও প্রত্যক্ষদর্শী রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান। তিনি মামলার ১২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে আবু সাঈদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রিকশায় তুলে হাসপাতালে পাঠানোর মুহূর্তসহ পুরো ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রংপুরের তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তা, এএসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় এবং বেরোবির কয়েকজন শিক্ষক–কর্মচারীকে ঘটনার জন্য দায়ী করেন তিনি।
তার জবানবন্দি শেষে পলাতক ও গ্রেপ্তার আসামিদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্সসহ অন্যান্য আইনজীবীরা জেরা করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল আজকের তারিখ নির্ধারণ করে।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মঈনুল করিম, সুলতান মাহমুদ এবং অন্যান্যরা।
এর আগে বিভিন্ন সময় সাক্ষী হাজির না হওয়ায় কয়েক দফা সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে। ৪ নভেম্বর সাক্ষী উপস্থিত না থাকায় দিন পিছিয়ে আজকের তারিখ ধার্য হয়। ২১ অক্টোবরও সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানো হয়। আর ১৩ অক্টোবর সাক্ষী হাজির করতে না পারায় সময় চেয়ে আবেদন করেন প্রসিকিউটর মঈনুল করিম।
৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে পুলিশের দুই উপপরিদর্শক—এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল—জব্দ তালিকার সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
২৯ সেপ্টেম্বর অষ্টম দিনে তিনজন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। ২২ সেপ্টেম্বর সপ্তম দিনের জেরায় স্টেট ডিফেন্স ছয় নম্বর সাক্ষী সিয়াম আহসান আয়ানকে জেরা করে। তিনি ২১ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দিয়ে আবু সাঈদকে হাসপাতালে নেওয়ার পুরো ঘটনাটি বর্ণনা করেন।
১৪ সেপ্টেম্বর পঞ্চম দিনে তদন্ত সংস্থার লাইব্রেরিয়ান আনিসুর রহমানকে জেরা করা হয়। তার আগে ৯ সেপ্টেম্বর তিনি এবং এসআই তরিকুল ইসলাম সাক্ষ্য দেন।
৮ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলামের জেরা সম্পন্ন হয়। তিনি ৭ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য দেন। একই দিনে এনটিভির সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট একেএম মঈনুল হকের জেরাও নেওয়া হয়।
