ইউক্রেনের শস্য রফতানি চুক্তি না বাড়ানোর সিদ্ধান্তে রাশিয়া

কৃষ্ণসাগরীয় শস্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, চুক্তিটি স্থগিত করা হয়েছে। যুদ্ধের পর মূলত এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের শস্য রফতানি প্রক্রিয়া চালু ছিল।

দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত কৃষ্ণ সাগরীয় চুক্তির রাশিয়া সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয় এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে এই চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। যখন চুক্তি অনুসারে রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বাস্তবায়ন হবে, আমরা চুক্তিতে ফিরে আসব।

গত বছরের জুলাইয়ে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেন কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি সই করে। নভেম্বরে চুক্তিটি ১২০ দিনের জন্য নবায়ন করা হয়েছিল। মার্চে রাশিয়া ১২০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনের জন্য শস্য রপ্তানি চুক্তিটি নবায়নের সুপারিশ করে। সোমবার চুক্তির সময়সীমা শেষ হয়েছে।

চুক্তি নবায়নের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চিঠিও লিখেছিলেন। রাশিয়ার অভিযোগ, শিপিং ও বীমার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেশটির খাদ্য ও সার রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

গত বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে বলেছিলেন যে খাদ্য ও সার রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে মস্কো এই চুক্তি থেকে নিজেকে স্থগিত করবে।

কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তির আওতায় ইউক্রেন ৩২ মিলিয়ন মেট্রিক টনের বেশি খাদ্যশস্য রফতানি করছে। রাশিয়ার অভিযোগ—যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য গরিব দেশগুলোয় পৌঁছাচ্ছে না। জাতিসংঘের দাবি, তারা যেসব দেশে খাদ্যশস্য পাঠাচ্ছে সেখানে খাদ্যশস্যের দাম বিশ্ববাজারের তুলনায় ২০ শতাংশ কম।

সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জানান যে, চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে সোমবার সকালে হঠাৎ করে ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগকারী সেতুতে ভয়াবহ হামলা হয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন দুই জন। এছাড়া সেতুর একটা পিলার ধ্বংস হয়েছে। এই হামলার পেছনে ইউক্রেন দায়ী বলে এএফপিকে জানিয়েছেন এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা।

যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণ সাগরের ইউক্রেনীয় বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় রাশিয়া। এর ফলে বিশ্বের অন্যতম গম উৎপাদনকারী ইউক্রেনের খাদ্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। বন্দরে আটকা পড়ে হাজার হাজার জাহাজ। এমন অবস্থায় তুরস্কের মধ্যস্ততায় মন গলে রাশিয়ার। চুক্তির পর ইউক্রেন থেকে খাদ্য রফতানি আবার শুরু হয়। তবে চুক্তি না বাড়ানোয় এই প্রক্রিয়া আবার থমকে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।