চলন্ত ট্রেনের উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে ঈগলের ধাক্কা,চালক আহত

বিমানে পাখির ধাক্কা লাগার ঘটনা নতুন নয়-প্রায়ই এমন খবর পাওয়া যায়, যা কখনো জরুরি অবতরণ, কখনো বিমানের বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়। কিন্তু এবার অস্বাভাবিক এক ঘটনা ঘটেছে রেলপথে। জম্মু-কাশ্মীরে চলন্ত একটি ট্রেনে ধাক্কা মেরে সামনের উইন্ডস্ক্রিন ভেঙে সরাসরি চালকের কেবিনে ঢুকে পড়েছে একটি বিশাল ঈগল। এতে কাচের আঘাতে ট্রেনের চালকের কপালে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয় এবং পরিস্থিতি মুহূর্তেই ভয়াবহ রূপ নেয়।

ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার সকালে বারামুলা–বানিহাল রেলপথে। ট্রেনটি অনন্তনাগ রেল স্টেশনমুখী ছিল। স্টেশনে ঢোকার ঠিক আগেই হঠাৎ তীব্র গতিতে আকাশ থেকে নেমে আসে বিশাল ডানা মেলা ঈগলটি। ট্রেনটি তখন স্বাভাবিক গতিতে চলছিল। কোনো সতর্কবার্তা বা সময় না দিয়েই ঈগলটি সরাসরি ট্রেনের সামনের কাচে ধাক্কা মারে। আঘাত এত প্রবল ছিল যে সামনের বড় অংশজুড়ে থাকা উইন্ডস্ক্রিন মুহূর্তের মধ্যেই ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে চালকের কেবিনে ছড়িয়ে পড়ে।

কাচ ভাঙার শব্দ ও ধাক্কার তীব্রতায় চালক দিশেহারা হয়ে পড়েন। ভাঙা কাচের ধারালো টুকরো এসে তাঁর কপালে লাগে, রক্তক্ষরণ শুরু হয়। বাধ্য হয়ে তিনি ট্রেনটি তৎক্ষণাৎ থামিয়ে দেন। ট্রেন থামার পর কর্মীরা দ্রুত চালককে অনন্তনাগ রেল স্টেশনে নিয়ে যান এবং সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। সৌভাগ্যক্রমে ইঞ্জিনে থাকা অন্য যাত্রীরা নিরাপদ ছিলেন।

রেলের এক কর্মকর্তা জানান, ঈগলটির গতি ছিল অবিশ্বাস্য রকম বেশি। সেই গতির জোরেই শক্ত কাচও টিকে থাকতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, রেলপথে এ ধরনের ঘটনা প্রায় বিরল—বিশেষত জম্মু–কাশ্মীরের মতো অঞ্চলে, যেখানে সাধারণত পাখিরা এত নিচে উড়ে না। নর্দান রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঈগলটি কেন এমন নিচ দিয়ে এবং এত প্রবল গতিতে উড়ছিল তা রহস্যজনক। বিষয়টি আবহাওয়ার প্রভাব, খাদ্যের সন্ধান নাকি অন্য কোনো কারণ -তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই অস্বাভাবিক ঘটনায় রেলপথে সাময়িকভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়, যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। পরে লাইন পরিষ্কার ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় চলাচল শুরু হয়।

রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘটনাটি অত্যন্ত ব্যতিক্রমী এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অতিরিক্ত সতর্কতা ও নজরদারি বাড়ানো হবে।

[news_photocard_button text="ফটোকার্ড দেখুন "]