মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা সব কিছু বন্ধ করে দিই: প্রধানমন্ত্রী

২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন হয়েছে। তবে এ খাতে খরচ নিয়ে সমালোচনায় মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা সব কিছু বন্ধ করে দিই। আবার ৩ হাজার মেগাওয়াটে ফিরে যাই। ’

সোমবার (১০ জুলাই) অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তা ভাতা ও অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, আমাদের সরকারের কার্যক্রমের হিসাব ১৯৯৬ সাল থেকে দেওয়াই ভালো। তখন তো আরও দুরবস্থা ছিল, মাত্র ১ হাজার ৫শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছিল। আমরাই বিশেষ আইন করে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা ৪ হাজার ৩শ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বাড়িয়েছিলাম। দ্বিতীয়বার যখন ক্ষমতায় আসি, দেখি সেখান থেকে এক হাজার মেগাওয়াট নাই। যাই হোক, তিন হাজার ৮০০ মেগাওয়াট থেকে ২৫ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের আশু করণীয় ব্যবস্থা এবং সেই সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নেই। দীর্ঘ মেয়াদি বাস্তবায়ন সময়ের ব্যাপার। আমরা যদি আশু করণী ব্যবস্থাটা না নিতাম তাহলে চিন্তা করে দেখেন, ওই ৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট হয়তো একশো-দুইশো করে বাড়ত। কিন্তু ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ তো পৌঁছাতে পারতাম না।

তিনি বলেন, অনেকে অনেক কথাই বলে। কুইক রেন্টাল দেওয়া হলো কেন, হিসাবও বের করে দেয় যে, এতো হাজার কোটি টাকা তাদের (কুইক রেন্টাল) দেওয়া হয়েছে। হ্যাঁ, দিয়েছি। কিন্তু তার বিনিময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি কতটুকু এগিয়েছে সে বিবেচনাও তো করতে হবে। চৌদ্দ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছি এটা বাস্তব কথা। কিন্তু এই ৯০ হাজারের বিপরীতে আজ বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় দাঁড়িয়েছে!

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এখানে ২০০৬ সালে বিএনপির আমলে সর্বশেষ বাজেট দিয়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার সর্বশেষ বাজেট দিয়েছে ৬৮ হাজার কোটি টাকা। আর আমরা ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করেছি। মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রবৃদ্ধির হার আমরা বাড়িয়েছি, এটা কী কখনও সম্ভব হতো? কখনও সম্ভব হতো না।

সমালোচকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এই সব লেখে মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে আবার ৩ হাজার মেগাওয়াটে ফিরে যাই। ফিরে গিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে দিই যে, কী অবস্থা হতো দেশে! মাথায় ঢুকতো কেন এটা করা হলো। সমালোচনা করতে পারেন, সমালোচনা ভালো। কিন্তু সেই সমালোচনাটা আমি মনে করি গঠনমূলক হওয়া উচিত। সেই সমালোচনার মধ্য দিয়ে সংশোধনের সুযোগ থাকা উচিত। শুধু তো বলার জন্য বলা না। হ্যাঁ, অপজিট তো বলবেই, তারা কথা বলে টক শো করে, টক শোতে ইচ্ছামতো বলে যাচ্ছে, যা বলার তাই বলে যাচ্ছে। সব কিছু বলার পর বলে, কথা বলার স্বাধীনতা নাই। স্বাধীনতা ছিল কখন? আইয়ুব খানের আমলে ছিল? জিয়াউর রহমানের আমলে ছিল? এরশাদের আমলে ছিল? ২০০১ সালের কথা একবার চিন্তা করেন, খালেদা জিয়া যখন সরকারে এলেন, দক্ষিণাঞ্চলে কি কোনো সাংবাদিক যেতে পেরেছিলেন?