মহাসমাবেশ থেকে ঢাকার সব প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল শনিবার (২৯ জুলাই) ঢাকা শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
কর্মসূচি ঘোষণার আগে লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অডিও নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রচার করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, শনিবারের যে কর্মসূচি তা ঘোষণা করছি। বাংলাদেশের ভোটাধিকার হরণকারী বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবিতে, বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ঢাকা মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। আশা করব প্রশাসন কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে দিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।
মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘গত দুই দিনে কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো লাভ হবে? গ্রেফতার করে কি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে থাকা মানুষকে থামানো যায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনকে বলব, অন্যায় আদেশে দেশের মানুষের বিরুদ্ধ অবস্থান নেবেন না। আপনারা আইনের শাসন মেনে চলুন। অন্যায়ভাবে জনগণকে গ্রেফতার করা বন্ধ করুন। সমাবেশ থেকে বলতে চাই- গ্রেফতার বন্ধ করুন। যদি ভালো চান, দেশের মঙ্গল চান যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন।’
সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে লুটপাট করছে। স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে। ডেঙ্গুর কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। সরকার সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে ভোটের অধিকার নষ্ট করেছে। মানুষ এখন ভোট দিতে যায় না। ঢাকা-১৭ আসনে ভোটে কী হয়েছে? ওখানে তাকেও (হিরো আলম) সহ্য করতে পারেনি। মেরেছে, পিটিয়েছে। তারপরও দেখা গেল মাত্র ৫ শতাংশ ভোট দিয়েছে। নেত্রকোনায় ভোট হয়েছে। কেউ অংশ নেয়নি আওয়ামী লীগ ছাড়া।’
এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘সবাই ক্লান্ত নাকি? যুদ্ধ করতে হবে। লড়াই, সংগ্রাম করতে হবে না? ক্লান্ত হলে হবে না। নতুন ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে তরুণদের। এজন্য আমাদের লড়াই, সংগ্রাম করতে হবে।’এ সময় তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতার অংশবিশেষ শোনান।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই একমত হয়েছি সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’
আবারও যেনতেনভাবে নির্বাচন করতে চায় সরকার- এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘শুধু আমরা নই, বাইরের দেশগুলোও বলছে তারা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চায়। তাদের (সরকার) অপকর্মের জন্য র্যাবের ওপর মার্কিন সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর নয়। আমাদের ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে। লাখ লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের নামে।’