জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপনের অভিযোগে চট্টগ্রামের মীরসরাই বারইয়ারহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেজাউল করিম খোকনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।
দুদকের মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, রেজাউল করিম খোকন সম্পদ বিবরণীতে ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৪১০ টাকার স্থাবর সম্পদ গোপন করেছেন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৩ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন।
২০১৯ সালে প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলে। ওই বছরের ৩ এপ্রিল দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ৬ মে তিনি চট্টগ্রাম-২ কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী জমা দেন। সেখানে তিনি নিজের নামে ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮১ টাকার স্থাবর এবং ৫২ লাখ ৫০ হাজার ১৫৭ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেন। তবে যাচাইয়ে দেখা যায়, তার নামে প্রকৃতপক্ষে ৩৯ লাখ ৯৯ হাজার ১৯১ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে-অর্থাৎ তিনি ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৪১০ টাকার সম্পদ গোপন করেন।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার পর পাঁচ বছরের মধ্যে রেজাউল করিম খোকন, তার স্ত্রী ও পুত্রের নামে প্রায় ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জিত হয়। জোরারগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে প্রাপ্ত দলিলপত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসব সম্পদ তার বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
দুদকের তদন্তে দেখা যায়, ২০১০–১১ করবর্ষ থেকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করে আসা খোকনের গত ১৫ বছরে বৈধ আয় ছিল ১ কোটি ১৭ লাখ ৪৭ হাজার ৪১২ টাকা। অথচ এই সময়ে তিনি স্থাবর ও অস্থাবর মিলে ২ কোটি ৪২ লাখ ১০ হাজার ৮৪৮ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। দায় ছিল মাত্র ৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, ফলে জ্ঞাত আয়ের বাইরে তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৩ টাকা।
চট্টগ্রাম কার্যালয়ের যাচাই প্রতিবেদন পাওয়ার পর দুদকের প্রধান কার্যালয় চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর মামলার অনুমোদন দেয়। অনুমোদনের পরই আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটি রেকর্ড করা হয়।





