চাঁদের পথে জাপানের মহাকাশযান

মুন স্নাইপার চন্দ্র ল্যান্ডার বহনকারী রকেট উৎক্ষেপণ করেছে জাপান। বৃহস্পতিবার একটি দেশীয় এইচআইআইএ রকেটের মাধ্যমে চন্দ্র অন্বেষণ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে দেশটি। এই মিশন সফল হলে চাঁদে অবতরণকারী বিশ্বের পঞ্চম দেশ হবে জাপান।

জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জাক্সা) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা অনুযায়ী রকেটটি দক্ষিণ জাপানের তানেগাশিমা স্পেস সেন্টার থেকে উড্ডয়ন করেছে এবং সফলভাবে স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (এসএলআইএম) ছেড়েছে। এর আগে প্রতিকূল আবহাওয়া থাকায় এক সপ্তাহে তিনটি প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে জাক্সা।

জাপানের লক্ষ্য মুন স্নাইপার নামে পরিচিত এই মহাকাশ যানটি চন্দ্রপৃষ্ঠে তার লক্ষ্যস্থলের ১০০ মিটারের মধ্যে ল্যান্ডারটি অবতরণ করা।

জাপানের মহাকাশ সংস্থা জাক্সার প্রেসিডেন্ট হিরোশি ইয়ামাকাওয়া একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্লিম ল্যান্ডার তৈরি করার প্রধান উদ্দেশ্য হল উচ্চ-নির্ভুলতার অবতরণ প্রমাণ করা এবং আমরা চাঁদের পৃষ্ঠে কেবল যেখানে অবতরণ করা সহজ সেখানে নয় বরং আমরা যেখানে চাই সেখানে অবতরণ করতে সক্ষম হব।

এইচ-আইআইএ রকেটটি এক্স-রে ইমেজিং এবং স্পেকট্রোস্কোপি মিশন (এক্সআরআইএসএম) স্যাটেলাইটও বহন করেছে, যা জাক্সা, নাসা এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার যৌথ প্রকল্প। স্যাটেলাইটটির লক্ষ্য মহাবিশ্বের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্লাজমা বায়ু পর্যবেক্ষণ করা। যা ছায়াপথের বিবর্তন বুঝতে বিজ্ঞানীদের সাহায্য করবে।

এই চন্দ্র অভিযান মিশনে জাপানের মোট ব্যয় প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলার। রকেটটি তৈরি করেছে মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ। এর উড্ডয়নও পরিচালনা করেছে তারা। এ নিয়ে ২০০১ সালের পর থেকে ৪৭টি এইচ-আইআইএ রকেট উৎক্ষেপণ করল জাপান। মহাকাশযানটির এবারের চন্দ্রাভিযানের সাফল্যের সম্ভাবনা ৯৮ শতাংশের কাছাকাছি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে অনাবিষ্কৃত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে একটি মহাকাশযান অবতরণ করার ঠিক দুই সপ্তাহ পরে এই মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করল জাপান। এরই কিছুদিন আগে, রাশিয়ার লুনা-২৫ ল্যান্ডার চাঁদে অবতরণ করার সময় বিধ্বস্ত হয়।

আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের প্রথম দিকে জাপানের রকেটটি চাঁদে অবতরণ করবে।

এর আগে মাত্র চারটি দেশ সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করেছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন এবং ভারত। জাপান ২০২০ এর দশকের শেষের দিকে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।